.

কী করে বুঝবেন আপনার সন্তান অটিজমে আক্রান্ত কিনা?

প্রতিটি শিশুই আলাদা, এবং প্রত্যেকেই নিজস্ব সময়ে বেড়ে ওঠে। একটা সময়ে সে কথা শেখে, খেলা শেখে, বসে, হাঁটে। কিন্তু অটিজমের শিকার শিশুদের ক্ষেত্রে এমন স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার ঘটনা দেখা যায় না। সঠিক ট্রিটমেন্টের জন্য যতো দ্রুত সম্ভব শিশুর মাঝে অটিজমের লক্ষণগুলো শনাক্ত করা যায়, তত ভালো। জেনে নিন কম বয়সে শিশুর মাঝে অটিজমের লক্ষণ খুঁজে পাওয়ার কিছু উপায়।
sasthobarta protidin
অটিজম স্পেকট্রাম ডিজর্ডারের ট্রিটমেন্ট যতো কম বয়সে শুরু করা যায়, শিশু পরবর্তীতে ততটাই বেশি উপকার পায়। আর তার মানসিক দক্ষতার উন্নতি ঘটানোর জন্য এই ট্রিটমেন্ট খুবই জরুরী। কিন্তু সমস্যা হলো, সাধারণত শিশুর বয়স ১২-১৮ মাস হলে এসব লক্ষণ দেখা যায়। বিভিন্ন রকমের লক্ষণ দেখা যেতে পারে এবং পিতামাতার পক্ষে এসব লক্ষণ শনাক্ত করাটাও কঠিন হয়। বাচ্চার শারীরিক কিছু লক্ষণ থাকতে পারে, বাবা-মা অথবা অন্য শিশুদের সাথে তার আচরণেও কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। Huffington Post এর একটি সংবাদ অনুযায়ী, অটিজম স্পিকস নামের একটি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি অটিজমের প্রাথমিক লক্ষণগুলো নিয়ে একটি ছোট্ট ভিডিও প্রকাশ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পাঁচটি লক্ষণের ব্যাপারে পিতামাতার সতর্ক থাকা উচিৎ-
১) নিজের নাম শুনলে সাড়া না দেওয়া

একটি সুস্থ শিশু বাবা-মা অথবা তার যত্ন নেয় এমন কারও মুখে নিজের নাম শুনলে সাড়া দেবে। অটিজম আছে এমন শিশুদের বেশভাগই নিজের নাম শুনলে সাড়া দেয় না।
২) অন্য কারও মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করে না

এক্ষেত্রে “জয়েন্ট অ্যাটেনশন” কথাটা ব্যবহার করা হয়। খুব সহজ একটি উদাহরণ দিলে জিনিসটি বোঝা যায়। সুস্থ একটি বাচ্চা চাঁদ দেখে মুগ্ধ হলে যে একবার চাঁদের দিকে তাকায়, আরেকবার মায়ের দিকে তাকায়, চাঁদের দিকে হাত ইশারা করে, মুখে শব্দ করে। কিন্তু অটিজমে আক্রান্ত শিশুর মাঝে এই কাজটা করতে দেখা যায় না। তারা নিজেদের উৎসাহ অন্য কারও সাথে শেয়ার করে না বা করতে পারে না।
৩) অন্যদের আচরণ অনুকরণ করে না

অন্য বাচ্চারা যেভাবে নড়াচড়া করে, একজন আরেকজনের দেখাদেখি তালি দেয়, অন্যদের দেখে হাত নাড়ায় তেমনটা সাধারণত করে না অটিস্টিক বাচ্চারা।
৪) মিছিমিছি খেলার প্রবণতা দেখা যায় না

বাচ্চারা নিজেকে মা ধরে নিয়ে পুতুলকে বাচ্চা বানিয়ে ঘরবাড়ি খেলা করে। খেলনা টেলিফোন নিয়ে কথা বলার ভান করে। ছোট্ট ছোট্ট হাঁড়িপাতিল নিয়ে রান্নার ছলে খেলা করে। কিন্তু অটিজম থাকলে এমন খেলার প্রবণতা দেখা যায় না।
৫) অন্যের আবেগের প্রতি তারা স্পর্শকাতর হয় না

সাধারণত বাচ্চারা অন্যদের আবেগ দেখলে নিজেরাও আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে। যেমন অন্যকে হাসতে দেখলে তারাও না বুঝেই হাসে। কিন্তু অটিজম আছে এমন শিশুরা এটা সাধারণত করে না।

পিতামাতা যা করতে পারেন

বাচ্চার বয়স ১২ মাস হবার সময় থেকেই পিতামাতার এই ব্যাপারগুলোর দিকে নজর রাখা উচিৎ। কোনো কিছুতে খটকা লাগলে শিশুর ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিৎ। ১২ মাস অর্থাৎ এক বছর বয়সে এগুলো ছাড়াও আরও কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে যেমন বাবা, মা এসব কথা না বলা, হামা না দেওয়া, ধরে ধরে হাঁটার চেষ্টা না করা ইত্যাদি। এসব লক্ষণের প্রতি থাকুন সতর্ক।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »

.