নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে শরীরটাকে
হালকা রাখতে হিমসিম খেতে হয় প্রায় সবাইকে। নতুন চাকরিতে কিংবা বিয়ের কিছুদিন পরই শুরু হয়ে যায়
দুশ্চিন্তা- “দিন দিন তো মোটা হয়ে যাচ্ছি!” আর মেয়েদের ক্ষেত্রে সন্তান হওয়ার পর তো
কথাই নেই, ওজন বেড়ে
দ্বিগুণ। কিন্তু আমরা
কয় জনেই চাই ওজন
বেশি নিয়ে ঘুরতে? অবশ্য না
চাইলেও উপায় নেই, ওজন যেন কিচ্ছুতে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। ডায়েট, ব্যায়াম ইত্যাদি সবকিছুকে ব্যর্থ
করে ওজন যেন দিন দিন
বাড়তে থাকে আর বাড়তেই থাকে!
আপনি জানেন
কি, এই ওজন বাড়ার
জন্য কিন্তু আপনিই দায়ি। আপনি হয়তো
ভাবচ্ছেন
আমি তো সবই ঠিক ঠাক করছি কিন্তু না যা করছেন ভুল করছেন। চলুন, আজ আমরা জেনে নেই এমন ২০টি টিপস, যেগুলো মেনে চললে সারা জীবন
আপনার ওজন থাকবে নিয়ন্ত্রণে। আপনি সবসময়
থাকবেন ফিট ও হিট!
১. ডায়েটিং
রোজকার জীবনে নিশ্চয়ই জরুরি,
তবে
খাবার খাওয়ার মধ্যে যেন
বেশি
সময়ের ব্যবধান না থাকে। ডায়েট
করতে গিয়ে কখনোই না খেয়ে থাকবেন। দিনে
অন্তত
চার থেকে পাঁচ বার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। হ্যাঁ, অবশ্যই
স্বাস্থ্যকর
খাবার।
২. যেহেতু
আজকাল বেশিরভাগ চাকরিও সেই ডেস্কে বসে, তাই মেয়েদের ক্ষেত্রে দৈনিক ক্যালোরি গ্রহনের পরিমান দিনে ১০০০-১৫০০ বেশি না হওয়াই
ভাল। পুরুষের শারিরিরক চাহিদা একটু বেশি বিধায়
তাদের জন্য ২০০০ ক্যালোরি বরাদ্দ। এর বেশি
হলেই
ভুঁড়ি জমতে সময় লাগবে না!
৩. রোজ দিনে
অন্তত একবার হালকা শরীরচর্চা করা জরুরি। দৈনিক ৩০ মিনিট দিন ব্যায়ামে। হয়তো কোথাও
হেঁটে গেলেন, কিংবা
বারান্দায় দাঁড়িয়ে সেরে নিলেন
জগিং।
৪. রাতের
খাবার খাওয়ার পর খানিকক্ষণ হালকা শরীরচর্চা করা ভাল। খাওয়ার ২
ঘণ্টা পর একটু হেঁটে নিতে পারেন। এতে শরীর ঝরঝরে থাকবে।
৫. এলোপাথাড়ি
ব্যায়াম না করে নিজের শরীরের সাথে মানানসই ব্যায়াম বেছে নেবেন। এবং দৈনিক
সময়মত করবেন ব্যায়ামটুকু। বাজার থেকে কেনান সস খাওয়া বাদ দিন,
এতে
প্রচুর চিনি থাকে।
৬. প্রত্যেক
সপ্তাহে একই দিনে ও একই সময়ে ওজন মাপুন। এটা আপনাকে মানসিকভাবে সাহায্য করে ওজন
নিয়ন্ত্রণ করতে, রাখবে সতর্ক।
৭.
খাওয়াদাওয়ার সঠিক সময় মেনে চলুন। একদম ঘড়ির কাঁটা ধরে। হজম ক্ষমতা গতিশীল রাখতে এটা খুব জরুরী।
৮. সারাদিনের
প্রত্যেকটা খাবার খাবেন,
বাদ
দেবেন না। এমনকি
ব্রেকফাস্ট খাওয়াও
প্রয়োজন অবশ্যই। পেট
দীর্ঘক্ষণ খালি রাখবেন না। এতে মেটাবলিজম কমে যাবে ও ওজন বাড়বে।
৯. ভাজা-পোড়া
যে খাবেন না তা কিন্তু নয়,
খাবারের
তালিকায় সপ্তাহে একদিন রাখুন।
১০.
নির্দিষ্ট বেলার খাবারের মাঝের সময়ে যদি খিদে পায়,তাহলে প্রচুর পরিমানে পানি খান। খেতে পারেন
প্রচুর ফল।
১১. মিষ্টি, কোমল পানীয়, কেক ইত্যাদি খাবার সপ্তাহে একদিন। বিস্কিট
কিনতে হলে ডায়েট বিস্কিট কিনুন।
১২. প্রাণীজ
ফ্যাট, বিশেষত লাল
মাংস ও ডালডা খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিন। মাংস খেলে চামড়া ও চর্বি বাদ দিয়ে খান
অবশ্যই।
১৩. অতিরিক্ত
দুধ জাতীয় খাবার যেমন মাখন বা চিজ বেশি খাবেন না। সপ্তাহে
দুদিন চলতে পারে।
১৪. দিনে
দুইকাপ গ্রিন টি পানের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
১৫.
মাদকজাতীয় দ্রব্যের নেশা ছেড়ে দিন। মদ্যপান ছেড়ে দিন।বিশেষ করে ধুমপানকে না বলুন।
১৬. পর্যাপ্ত
পরিমানে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খান (যেমন – আলু,
ভাত, রুটি)। এগুলো বেশি
খাওয়া মানেই শরীর মোটা হয়ে যাওয়া। লাল চালের ভাত ও লাল আটার রুটি খেতে পারলে সবচাইতে ভালো।
১৭. দুপুরে ও
রাতে অবশ্যই এক কাপ করে সালাদ বা কম মশলায় রান্না সবজি খেতে হবে।
১৮. খাবারের
প্লেটের আকার ছোট করুন এবং একবারের বেশি দুবার নিয়ে খাওয়ার প্রবণতা ত্যাগ করুন। খাবার একবারেই
প্লেটে তুলে নেবেন।
১৯. চেষ্টা
করুন সকালে ভারী ব্রেকফাস্ট করার। সামান্য ভারী লাঞ্চ এবং হালকা ডিনার করার। নাস্তা হিসাবে খান বাদাম, মুড়ি, ফল, ডায়েট বিস্কিট।
২০. চিনি
খাওয়া কমিয়ে নিয়ে আসুন দিনে দুই চামচে। এর বেশি প্রয়োজন নেই।